সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্য বিধি মেনেই এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশন আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু ৯ম বাংলাদেশ গেমস ২০২০’। গত ১ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে গেমসের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। প্রধানমন্ত্রী নিজেই স্বাস্থ্য বিধি মেনে গেমস আয়োজনের নির্দেশ দেন। বিওএ তাঁর নির্দেশনা মেনেই গেমস আয়োজনের ব্যবস্থা করেছে। গেমসের তৃতীয় দিনে আজ শনিবার ক্রীড়া পরিষদের জিমন্যাসিয়ামে ঢুকতেই দেখা গেলো থার্মাল স্ক্যানার। সকল জিমন্যাস্টস থেকে শুরু করে সবার শারীরিক তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হচ্ছে। সবার মুখেই ছিল মাস্ক। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বসেছেন অ্যাথলেটরা। জিমন্যাস্টিকস ফেডারেশনের সঙ্গে সর্ম্পক্ত নয় এমন কাউকে জিমন্যাসিয়ামে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। করোনা ভাইরাসের এ মহামারির সময় শুধু বাংলাদেশ জিমন্যাস্টিকস ফেডারেশনই নয়,বঙ্গবন্ধু ৯ম বাংলাদেশ গেমসের ৩১টি ডিসিপ্লিনের সবগুলোতেই মানা হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি। কোভিড-১৯ পরিস্থিতির মধ্যেও জাতির পিতার নামের এ গেমসটি আয়োজনের যে চ্যালেঞ্জ ছিল বিওএ’র জন্য,এখনো পর্যন্ত সবকিছু সুন্দরভাবে এবং পরিকল্পনামাফিক হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু ৯ম বাংলাদেশ গেমসের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের সময়ই প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে। গেমসের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে বিভিন্ন দিক নিদের্শনাও দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তার নিদের্শনার পর আরও সর্তকতা অবলম্বন করে বিওএর কর্মকর্তারা। অবশ্য গত দশ দিন ধরেই করোনা ভাইরাসের সংক্রমন বাড়তে থাকায় আগে থেকেই নানা পদক্ষেপ নেন আয়োজকরা। কভিড-১৯ কীভাবে প্রতিরোধ করা হবে তা গেমস শুরুর আগে থেকেই বিভিন্ন পরিকল্পনা হাতে নেয় বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিশেন। সশস্ত্র বাহিনী, বিভিন্ন হাসপাতাল, কুর্মিটোলা গলফ ও বিভাগীয় শহওে সিভিল সার্জনদের নিয়ে গঠন করা হয় কমিটি। শুরু থেকেই তারা ২৯টি ভেন্যুতে থাকছেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছেন। সবচেয়ে বড় ভয় ছিল করোনা আক্রান্ত নিয়ে। তবে এখনো পর্যন্ত কোনো অ্যাথলেট, কোচ, কমকর্তা, টেকনিক্যাল অফিসার এবং গেমসের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কেউই করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হননি। অবশ্য কভিড-১৯’ আক্রান্তরা যাতে ভেন্যুগুলোতে প্রবেশ করতে না পারে সেই ব্যবস্থা আগেই করেছে আয়োজকরা। কোভিড নেগেটিভ সার্টিফিকেট নিয়ে গেমসের ভেন্যুতে প্রবেশ করেছেন সবাই।
করোনা ভাইরাসের কারণে গত বছর স্থগিত হয়ে যায় বঙ্গবন্ধু ৯ম বাংলাদেশ গেমস। সেই সময় নতুন মহামারি সর্ম্পকে অজানা ছিল বলে পুরো বিশ্বক্রীড়াঙ্গনে স্থবিরতা নেমে এসেছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুরদর্শী চিন্তা এবং সঠিক পরিকল্পনার কারণে করোনা মহামারি মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ। এখন সংক্রমন উর্ধ্বগতি হলেও কীভাবে তা মোকাবেলা করতে হবে তা জানা আছে বলেই দেশের ক্রীড়াঙ্গনের সবচেয়ে বড় ক্রীড়া আসরটি আয়োজন করছে বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন। ১ এপ্রিল উদ্বোধনের পর শুক্রবার গেমসের মাঠের লড়াইয়ে বিভিন্ন ভেন্যুতে ঘুরে দেখা গেছে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই হচ্ছে গেমসটি। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম, শহীদ ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী জাতীয় হ্যান্ডবল স্টেডিয়াম, পল্টনের উডেন ফ্লোর জিমন্যাসিয়াম, শেখ রাসেল রোলার স্কেটিং, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে ভেন্যুগুলোতে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে সবগুলোতেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে খেলা হচ্ছে। ভয়, শংকা সবকিছু দূরে সরিয়ে ক্রীড়াবিদরা দেখাচ্ছেন তাদের পারফরমেন্স শৈলী। সবার মধ্যেই দেখা গেছে উৎসবের আমেজ। দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা বিভিন্ন ডিসিপ্লিনের অ্যাথলেটরা নিজেদের উজাড় করে দিচ্ছেন। আগামীর তারকা হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে এসব ক্রীড়াবিদদের সঙ্গে আয়োজকরাও স্বাস্থ্যবিধি মানা নিয়ে বেশ সচেতন।