দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের ২৯৮তম দিনে ২৪ ঘন্টায় এই ভাইরাসে সংক্রমণ কমেছে, বেড়েছে সুস্থতার হার।
গত ২৪ ঘন্টায় ১৩ হাজার ২৫৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ১৪ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ২২১ জন কম শনাক্ত হয়েছে। গতকাল ১৫ হাজার ২২৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ১ হাজার ২৩৫ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৮ দশমিক ১১ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ শনাক্তের হার দশমিক ৪৬ শতাংশ কম।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দেশে এ পর্যন্ত মোট ৩২ লাখ ২৭ হাজার ৫৯৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৫ লাখ ১৩ হাজার ৫১০ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার ২৫ লাখ ৫৭ হাজার ৯৩১টি হয়েছে সরকারি এবং ৬ লাখ ৬৯ হাজার ৬৬৭টি হয়েছে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৫ দশমিক ৯১ শতাংশ। গতকাল পর্যন্ত এই হার ছিল ১৫ দশমিক ৯৪ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসা মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন মোট ১ হাজার ৩৮৯ জন। দেশে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৪ লাখ ৫৭ হাজার ৪৫৯ জন।
আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৯ দশমিক ০৮ শতাংশ। গতকাল সুস্থতার হার ছিল ৮৮ দশমিক ৯৯ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ০৯ শতাংশ বেশি।
গত ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে ২৮ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকালের চেয়ে আজ ৬ জন বেশি মৃত্যুবরণ করেছে। গতকাল ২২ জন মৃত্যুবরণ করেছিল। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছে ৭ হাজার ৫৫৯ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৭ শতাংশ। গত ২৮ ডিসেম্বর থেকে মৃত্যুর একই হার বিদ্যমান রয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৩ হাজার ২০৪ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৫ হাজার ৪০৮ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ২ হাজার ২০৪টি নমুনা কম সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের সরকারি ১১৫ ও বেসরকারি ৬৫টিসহ ১৮০টি পরীক্ষাগারে (এন্টিজেন টেস্টসহ) নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৩ হাজার ২৫৪ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৫ হাজার ২২৯ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ১ হাজার ৯৭৫টি কম নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত শনাক্ত ৩০১৫ দশমিক ২১ জন। সুস্থ হয়েছেন প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত ২৬৮৬ দশমিক ০৯ জন এবং প্রতি ১০ লাখে মারা গেছেন এ পর্যন্ত ৪৪ দশমিক ৩৮ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারী ২৮ জনের মধ্যে পুরুষ ২১ জন, আর নারী ৭ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ মৃত্যুবরণ করেছেন ৫ হাজার ৭৫৪ জন, আর নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ৮০৫ জন। শতকরা হিসেবে পুরুষ ৭৬ দশমিক ১২ শতাংশ; নারী ২৩ দশমিক ৮৮ শতাংশ। ২৪ ঘন্টায় ২৬ জন হাসপাতালে এবং ২ জন বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেছেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ৩১ থেকে ৪০ বছর বছরের ২ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছর বছরের ৩ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছর ৫ জন এবং ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ১৮ জন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩৫ জন, যা দশমিক ৪৬ শতাংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৫৭ জন, যা দশমিক ৭৫ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১৫৯ জন; যা ২ দশমিক ১০ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩৭৮ জন; যা ৫ শতাংশ; ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৮৮৮ জন; যা ১১ দশমিক ৭৫ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ৯১৬ জন; যা ২৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ৪ হাজার ১২৬ জন, যা ৫৪ দশমিক ৫৮ শতাংশ।
মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘন্টায় ঢাকা বিভাগে ২২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৩ জন এবং বরিশাল, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগে ১ জন করে মৃত্যুবরণ করেছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ৪ হাজার ১৫১ জন, যা ৫৪ দশমিক ৯১ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ৪১০ জন, যা ১৮ দশমিক ৬৫ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ৪৩৩ জন, যা ৫ দশমিক ৭৩ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৫৩০ জন, যা ৭ দশমিক ০১ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ২৩৮ জন, যা ৩ দশমিক ১৫ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ২৯১ জন, যা ৩ দশমিক ৮৫ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ৩৩৯ জন, যা ৪ দশমিক ৪৮ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১৬৭ জন, যা ২ দশমিক ২১ শতাংশ।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৩ হাজার ২৬৯টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৪৬৫ জন ও শয্যা খালি আছে ১ হাজার ৮০৪টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩১০টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ১৯২ জন ও শয্যা খালি আছে ১১৮টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৬৮৭টি, ভর্তিকৃত রোগী ২২৬ জন ও শয্যা খালি আছে ৪৬১টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৪৫টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ২০ জন ও শয্যা খালি আছে ২৫টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৬ হাজার ৫৩৯টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ৫৪০ জন ও শয্যা খালি আছে ৫ হাজার ৯৯৯টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২৪৭টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৮৩ জন ও শয্যা খালি আছে ১৬৪টি। সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১০ হাজার ৪৯৫টি, রোগী ভর্তি আছে ২ হাজার ২৩১ জন এবং শয্যা খালি আছে ৮ হাজার ২৬৪টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৬০২টি, রোগী ভর্তি আছে ২৯৫ জন এবং খালি আছে ৩০৭টি। সারাদেশে সরকারি হাসপাতালে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১২ হাজার ৭৯৫টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৭১৪টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৬২১টি, আইসিইউ বেড ৬৮৮ ও ভেন্টিলেটর ৬২০।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd এর CORONA কর্ণারে ‘করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ’ লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হওয়া ১ হাজার ৩৮৯ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ৯৯০ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৯৫ জন, রংপুর বিভাগে ৫০ জন, খুলনা বিভাগে ৩৭ জন, বরিশাল বিভাগে ৩৬ জন, রাজশাহী বিভাগে ৪৮ জন, সিলেট বিভাগে ২৮ জন এবং ময়মনসিংহে ৫ জন সুস্থ হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৬৫২ জন, আর কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৬৫৪ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৬ লাখ ৪ হাজার ৩৫ জন, আর এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৫ লাখ ৬৫ হাজার ১৮২ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৩৮ হাজার ৮৫৩ জন।
গত ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ১১৭ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ১৮০ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৯৬ হাজার ৩২৯ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৮৪ হাজার ৮৭০ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১১ হাজার ৪৫৯ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৫ হাজার ৪৫২ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ১৪ লাখ ২৭ হাজার ৬৪৮ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ১ হাজার ৬৪৬টি, ৩৩৩ এই হটলাইন নম্বরে ৪ হাজার ৮৩৯টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ১২১টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৬ হাজার ৬০৬টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ২ কোটি ৩২ লাখ ৮২ হাজার ২৯৫টি।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ কোটি ১৯ লাখ ২৮ হাজার ৮১০ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১ লাখ ৮২ হাজার ৪৩১ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৮ কোটি ৭ লাখ ৭৩ হাজার ৩৩ জন এবং ১৭ লাখ ৮৩ হাজার ৬১৯ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।