দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের ২৭৬তম দিনে এই ভাইরাস থেকে সুস্থ মানুষের সংখ্যা ৪ লাখ ছাড়িয়েছে।গত ১৬ নভেম্বর করোনাভাইরাস থেকে সুস্থ হয়ে উঠা মানুষের সংখ্যা সাড়ে ৩ লাখ ছাড়িয়েছিল। ওইদিন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছিল ৩ লাখ ৫১ হাজার ১৪৬ জন। ১ মাসে এই ভাইরাস থেকে সুস্থ হয়েছেন ৫০ হাজার ৪৮ জন। করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৪ লাখ ১ হাজার ১৯৪ জন। এরমধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৫৭১ জন। আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৩ দশমিক ২৪ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৮৩ দশমিক ০৯ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ১৫ শতাংশ বেশি।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় ১৭ হাজার ৮৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২ হাজার ২০২ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকাল ১৪ হাজার ৩৬৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ২ হাজার ১৯৮ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১২ দশমিক ৮৯ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ১৫ দশমিক ৩০ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ শনাক্তের হার ২ দশমিক ৪১ শতাংশ কম।
দেশে এ পর্যন্ত মোট ২৮ লাখ ৯৪ হাজার ৬২২ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৪ লাখ ৮১ হাজার ৯৪৫ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৬৫ শতাংশ। গতকাল পর্যন্ত এই হার ছিল ১৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৩২ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকালের চেয়ে আজ ৪ জন কম মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল ৩৬ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৬ হাজার ৯০৬ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ। গত ১৪ নভেম্বর থেকে মৃত্যুর একই হার বিদ্যমান রয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৭ হাজার ২০০ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৪ হাজার ৮৯৩ জনের। গতকালের চেয়ে ২ হাজার ৩০৪টি নমুনা বেশি সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের সরকারি ৭৬টি ও বেসরকারি ৬১টিসহ মোট ১৩৭টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে (এন্টিজেন টেস্টসহ) ১৭ হাজার ৮৪ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৪ হাজার ৩৬৯ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ২ হাজার ৭১৫টি বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত শনাক্ত ২৮২৯ দশমিক ৮৭ জন। সুস্থ হয়েছেন প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত ২৩৫৫ দশমিক ৭২ জন এবং প্রতি ১০ লাখে মারা গেছেন এ পর্যন্ত ৪০ দশমিক ৫৫ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারী ৩২ জনের মধ্যে পুরুষ ২৫ জন, আর নারী ৭ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ মৃত্যুবরণ করেছেন ৫ হাজার ২৮০ জন, আর নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ৬২৬ জন। শতকরা হিসেবে পুরুষ ৭৬ দশমিক ৪৫ শতাংশ; নারী ২৩ দশমিক ৫৫ শতাংশ। ২৪ ঘন্টায় ৩২ জনই হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ২১ থেকে ৩০ বছরের ১ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ৩ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ৬ জন এবং ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ২২ জন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩৩ জন; যা দশমিক ৪৮ শতাংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৫৫ জন; যা দশমিক ৮০ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১৫৫ জন; যা ২ দশমিক ২৪ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩৫২ জন; যা ৫ দশমিক ১০ শতাংশ; ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৮২৬ জন; যা ১১ দশমিক ৯৬ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ৭৮২ জন; যা ২৫ দশমিক ৮০ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ৩ হাজার ৭০৩ জন; যা ৫৩ দশমিক ৬২ শতাংশ।
মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘন্টায় ঢাকা বিভাগে ২৩ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৬ জন, বরিশাল, সিলেট ও রংপুর বিভাগে ১ জন করে মৃত্যুবরণ করেছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ৩ হাজার ৭৪৩ জন; যা ৫৪ দশমিক ২০ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ২৮৮ জন; যা ১৮ দশমিক ৬৫ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ৪১৪ জন; যা ৫ দশমিক ৯৯ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৫০৩ জন; যা ৭ দশমিক ২৮ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ২২৮ জন; যা ৩ দশমিক ৩০ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ২৭১ জন; যা ৩ দশমিক ৯২ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ৩১২ জন; যা ৪ দশমিক ৫২ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১৪৭ জন; যা ২ দশমিক ১৩ শতাংশ।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৩ হাজার ৪০৪টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ৯৪ জন ও শয্যা খালি আছে ১ হাজার ৩১০টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩১৬টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ২৪৪ জন ও শয্যা খালি আছে ৭২টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৮৩৪টি, ভর্তিকৃত রোগী ৩০১ জন ও শয্যা খালি আছে ৫৩৩টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৪৩টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ২১ জন ও শয্যা খালি আছে ২২টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ২৭৭টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ৫৯৪ জন ও শয্যা খালি আছে ৬ হাজার ৬৮৩টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২১৯টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৮৯ জন ও শয্যা খালি আছে ১৩০টি। সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১১ হাজার ৫১৫টি, রোগী ভর্তি আছে ২ হাজার ৯৮৯ জন এবং শয্যা খালি আছে ৮ হাজার ৫২৬টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৭৮টি, রোগী ভর্তি আছে ৩৫৪ জন এবং খালি আছে ২২৪টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১৪ হাজার ৩৭০টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৬৫৯টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৫২৯টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd এর CORONA কর্ণারে ‘করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ’ লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হওয়া ২ হাজার ৫৭১ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ১ হাজার ৮২৬ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৫২০ জন, রংপুর বিভাগে ৩৭ জন, খুলনা বিভাগে ৩৬ জন, বরিশাল বিভাগে ৪০ জন, রাজশাহী বিভাগে ৫২ জন, সিলেট বিভাগে ৩৪ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ২৬ জন সুস্থ হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ১ হাজার ১৮৭ জন, আর কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ১ হাজার ১১ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৮৭ হাজার ৯১২ জন, আর এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৫ লাখ ৪৫ হাজার ৮৭৩ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪২ হাজার ৩৯ জন।
গত ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ২১১ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ২৪৮ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৯২ হাজার ৮৭২ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৮০ হাজার ৭৬ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১২ হাজার ৭৯৬ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৪ হাজার ৪৪৮ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ১৩ লাখ ৫ হাজার ৬৪৫ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ২ হাজার ৩৭৫টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ১৯৩টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ২ হাজার ৫৬৮টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ২ কোটি ৩১ লাখ ১৯ হাজার ৬২৬টি।
কোভিড বিষয়ে হটলাইনে ২৪ ঘন্টায় ফোন করে স্বাস্থ্যসেবা নিয়েছেন ৩ হাজার ৬২০ জন, এবং এ পর্যন্ত ৬ লাখ ২ হাজার ২২৮ জন।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ কোটি ১১ লাখ ১৪ হাজার ৫৪৫ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১ লাখ ৬৯ হাজার ৭০ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৬ কোটি ৬৪ লাখ ২২ হাজার ৫৮ জন এবং ১৫ লাখ ৩২ হাজার ৪১৮ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।