দেশে গত ২৪ ঘন্টায় কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ২১ জন। একই সময়ে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৬৯৩ জন।
গতকালের চেয়ে আজ ৭ জন বেশি মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল মৃত্যুবরণ করেছিলেন ১৪ জন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৬ হাজার ১৯৪ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ। গতকালও মৃত্যুর একই হার বিদ্যমান ছিল।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৬৯৩ জন। গতকালের চেয়ে আজ ২৩১ জন বেশি সুস্থ হয়েছেন। গতকাল সুস্থ হয়েছিলেন ১ হাজার ৪৬২ জন। দেশে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৩ লাখ ৪৯ হাজার ৫৪২ জন।
আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮০ দশমিক ৮৫ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৮০ দশমিক ৮০ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ০৫ শতাংশ বেশি।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় ১৪ হাজার ৬০ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ৮৩৭ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ৩০৬ জন বেশি শনাক্ত হয়েছে। গতকাল ১১ হাজার ৭৯৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলে ১ হাজার ৫৩১ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ০৭ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ১২ দশমিক ৯৮ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ শনাক্তের হার দশমিক ০৯ শতাংশ বেশি।
দেশে এ পর্যন্ত মোট ২৫ লাখ ৪১ হাজার ১৯৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৪ লাখ ৩২ হাজার ৩৩৩ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৭ দশমিক ০১ শতাংশ। গতকাল পর্যন্ত এই হার ছিল ১৭ দশমিক ০৩ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৪ হাজার ৩ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১১ হাজার ৫৭৭ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ২ হাজার ৪২৬টি নমুনা বেশি সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ১১৬টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৪ হাজার ৬০ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১১ হাজার ৭৯৫ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ২ হাজার ২৬৫টি বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত শনাক্ত ২৫৩৮ দশমিক ৫৬ জন। সুস্থ হয়েছেন প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত ২০৫২ দশমিক ৪৩ জন এবং প্রতি ১০ লাখে মারা গেছেন এ পর্যন্ত ৩৬ দশমিক ৩৭ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারী ২১ জনের মধ্যে পুরুষ ১৭ জন, আর নারী ৪ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ মৃত্যুবরণ করেছেন ৪ হাজার ৭৬৮ জন, আর নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ৪২৬ জন। শতকরা হিসেবে পুরুষ ৭৬ দশমিক ৯৮ শতাংশ; নারী ২৩ দশমিক ০২ শতাংশ। ২৪ ঘন্টায় ২১ জনই হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ২১ থেকে ৩০ বছরের ২ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ১ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ৪ জন এবং ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ১৪ জন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ২৯ জন; যা দশমিক ৪৭ শতাংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৪৮ জন; যা দশমিক ৭৭ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১৪৩ জন; যা ২ দশমিক ৩১ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩৩১ জন; যা ৫ দশমিক ৩৪ শতাংশ; ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৭৬০ জন; যা ১২ দশমিক ২৭ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ৬৩১ জন; যা ২৬ দশমিক ৩৩ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ৩ হাজার ২৫২ জন; যা ৫২ দশমিক ৫০ শতাংশ।
মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগ ভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘন্টায় ঢাকা বিভাগে ১৪ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৩ জন এবং রাজশাহী, বরিশাল, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগে ১ জন করে মৃত্যুবরণ করেছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ৩ হাজার ২৪৮ জন; যা ৫২ দশমিক ৪৪ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ২১৪ জন; যা ১৯ দশমিক ৬০ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ৩৭৮ জন; যা ৬ দশমিক ১০ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৪৮২ জন; যা ৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ২০৭ জন; যা ৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ২৫৭ জন; যা ৪ দশমিক ১৫ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ২৭৮ জন; যা ৪ দশমিক ৪৯ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১৩০ জন; যা ২ দশমিক ১০ শতাংশ।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৩ হাজার ৫১৯টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৮৭০ জন ও শয্যা খালি আছে ১ হাজার ৬৪৯টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩১৪টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ১৯৯ জন ও শয্যা খালি আছে ১১৫টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭৭০টি, ভর্তিকৃত রোগী ১৪৮ জন ও শয্যা খালি আছে ৬২২টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ১৪ জন ও শয্যা খালি আছে ২৫টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ১৬৪টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ৫৩২ জন ও শয্যা খালি আছে ৬ হাজার ৬৩২টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২১১টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৬৪ জন ও শয্যা খালি আছে ১৪৭টি। সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১১ হাজার ৪৫৩টি, রোগী ভর্তি আছে ২ হাজার ৫৫০ জন এবং শয্যা খালি আছে ৮ হাজার ৯০৩টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৬৪টি, রোগী ভর্তি আছে ২৭৭ জন এবং খালি আছে ২৮৭টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১৩ হাজার ৬০৬টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৫৯৮টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৩৯৪টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd এর CORONA কর্ণারে ‘করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ’ লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হওয়া ১ হাজার ৬৯৩ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ১ হাজার ৩০৯ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ২৫৩ জন, রংপুর বিভাগে ১২ জন, খুলনা বিভাগে ৪০ জন, বরিশাল বিভাগে ১২ জন, রাজশাহী বিভাগে ৩৫ জন, সিলেট বিভাগে ২৬ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৬ জন সুস্থ হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৫৭৯ জন, আর কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৬৩৯ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৬৫ হাজার ৬৯৫ জন, আর এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৫ লাখ ২৬ হাজার ৪৪০ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৩৯ হাজার ২৫৫ জন।
গত ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৯৫ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ১৩৩ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৮৮ হাজার ৪০৮ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৭৬ হাজার ২৭০ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১২ হাজার ১৩৮ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৪ হাজার ৮০৬ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ১১ লাখ ৮৫ হাজার ৩১৭ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৫ হাজার ৭২৭টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ২৭৪টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৬ হাজার ১টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ২ কোটি ২৫ লাখ ১৭ হাজার ১৪৯টি।
কোভিড বিষয়ে হটলাইনে ২৪ ঘন্টায় ফোন করে স্বাস্থ্যসেবা নিয়েছেন ২ হাজার ৪৬১ জন, এবং এ পর্যন্ত ৫ লাখ ৪৩ হাজার ২২৪ জন।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৯৯ লাখ ৬৪ হাজার ২২৫ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১ লাখ ৫৩ হাজার ২৪৩ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৫ কোটি ৩১ লাখ ৬৪ হাজার ৮০৩ জন এবং ১৩ লাখ ৫৭৬ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।