সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় ছয়টি মৌজার আবাদী মাঠের বন্যার পানি নিষ্কাশনের সরকারী নালায় মাটি ফেলে ভরাট করে বানানো হচ্ছে ঈদগা মাঠ। এ কারণে ছয়টি মৌজার আবাদী জমিগুলো বন্যার পানি নিস্কাশন বন্ধ হয়ে জলাবদ্ধতায় পরিনত হয়েছে। বন্যা পরবর্তী রবি মৌসুমের সরিষা আবাদ করা যাবে কিনা তা নিয়ে ঐ ছয়টি মৌজার কৃষকেরা দ্বিধা দন্দ্বে রয়েছে।
উল্লাপাড়া সদরের আশে পাশে অবস্থিত ছয়টি মৌজার মধ্যে চারটি মৌজাই উল্লাপাড়া সদর ইউনিয়নের মধ্যে। একটি মৌজা কয়ড়া ইউনিয়নের মধ্যে ও একটি মৌজা পূর্ণিমাগাঁতী ইউনিয়নের মধ্যে বলে জানা গেছে । মৌজা গুলো হলো- বাখুয়া , পংরৌহা, ভদ্রকোল , নাগরৌহা , চড়ইমুড়ি ও ভেংড়ী । স্বাভাবিক বর্ষা হলেই মৌজাগুলোর বেশীর ভাগ আবাদী জমি পানিতে তলিয়ে যায়। কচুয়া নদীর শাখা বুড়ির বিল নামের নালা হয়ে ঐ ছয়টি মৌজায় বন্যার পানি ঢোকে অতঃপর বের হয়ে যায়। এটি সরকারী নালা বলে জানা গেছে । এদিকে প্রায় বিশ বছর পূর্বে ভেংড়ী মৌজায় কচুয়া নদী থেকে প্রায় পাচশো ফুট দীর্ঘ একটি খাল স্থানীয় এক ইটভাটা মালিক নিজ উদ্যোগে ও নিজ অর্থে এই খাল খনন করেন। তিনি জমি ভাড়া ( লিজ) নিয়ে নিজ ব্যবসার সুবিধার্থে খালটি করেন। বুড়ির বিল খাল ও ভেংড়ী নালা হয়ে পানি নিষ্কাশন হতো বলে জানা গেছে। গত প্রায় দু'বছর আগে ঐ খালটি জমির মালিকানা দাবি করে ভরাট করে ফেলেছেন। আর এতে সরকারী বুড়ির বিল নামের নালা দিয়ে বন্যার পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে জলাবদ্ধতার সৃস্টি হয়েছে। গত বর্ষা মৌসুমের পর চরপাড়া গ্রামের কবরস্থানের কাছে বুড়ির বিল নালার এক অংশ আড়াআড়িভাবে মাটি ফেলে ভরাট করে মাঠ বানানো হয়েছে। চরপাড়া কবরস্থান কমিটি নালাটি এভাবে ভরাট করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে গিয়ে আরো দেখা গেছে , বুড়ির বিল নালা হয়েই আদি কাল থেকেই ঐ ছয়টি মৌজার পানি নিষ্কাশন হতো। প্রায় একশো ফুট চওড়া নালাটির প্রায় এক বিঘা পরিমাণ আড়াআড়িভাবে মাটি ফেলে ভরাট করা হয়েছে । একপাশের সামান্য জায়গা বাদ রয়েছে।
চরপাড়া কবরস্থান কমিটির সভাপতি মাহবুবুল ইসলাম জানান নালাটি সরকারী হলেও তাদের দরকারে ভরাট করে মাঠ বানানো হয়েছে। পানি নিষ্কাশনে বাধা হলে সেখানকার মাটি সরিয়ে ফেলা কিংবা পাইপ বসিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে দেবেন বলে তিনি জানান।
নাগরৌহা গ্রামের কৃষক আঃ কাদের , ছাইদুর রহমান বলেন নালাটি ভরাট করে পানি নিষ্কাশনের পথ আটকে দেওয়া হয়েছে। সামনের সরিষা আবাদ শুরুর মৌসুম কালেও নীচু জমিগুলোয় পানি জমে থাকবে বলে সরিষা আবাদ করা হয়তো যাবে না।
কৃষক করিম মিয়ার ধারণা নীচু জমিগুলো তো থাকবেই কার্তিক মাসে ভারী বৃষ্টি হলে উচু জমিগুলোয় পানি জমে থাকবে বলে জানান।
উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান পান্না বলেন বিষয়টি দেখে ও জেনে প্রযোজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সূবর্ণা ইয়াসমিন সুমী জানান , সরকারী নালা হয়ে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা কোনোভাবেই আটকানো যাবে না। তার বিভাগ থেকে সরেজমিনে সেখানে গিয়ে দেখে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ( ইউএনও ) দেওয়ান মওদুদ আহমেদ বলেন সরকারী নালা ভরাট করে পানি নিষ্কাশনের পথ আটকে দেওয়ার বিষয়টি সরেজমিনে গিয়ে দেখে উপজেলা প্রশাসন থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান।