×
ব্রেকিং নিউজ :
দক্ষতার সাথে দ্রুত কাজ করার তাগিদ গণপূর্তমন্ত্রীর গোপালগঞ্জে মুকসুদপুরে অভিযোগ প্রতিকার বিষয়ক সমন্বয় সভা নড়াইলে দুস্থদের মাঝে বিনামূল্যে ছাগল বিতরণ বিলাইছড়িতে অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ পিরোজপুরে ঈদ-উল ফিতরে ৩ লক্ষ দরিদ্র মানুষ পাচ্ছে ৯০৯ মেট্রিক টন চাল প্রথম বাংলাদেশী আম্পায়ার হিসেবে আইসিসি এলিট প্যানেলে অন্তর্ভুক্ত হলেন সৈকত রেলমন্ত্রীর সঙ্গে ভারতীয় হাইকমিশনারের সাক্ষাৎ বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের ভিত্তি স্থাপনে বাংলাদেশি আমেরিকানদের প্রশংসায় ডোনাল্ড লু মুক্তিযুদ্ধ ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির চেতনা তৃণমূলে ছড়িয়ে দেয়ার আহ্বান রাষ্ট্রপতির বিএনপি স্বাধীনতার মর্মার্থকে অকার্যকর করতে চায় : ওবায়দুল কাদের
  • প্রকাশিত : ২০১৮-০৪-২৬
  • ৭১৪ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক
আইনত পাসপোর্ট পাবেন না তারেক রহমান
নিজস্ব প্রতিনিধি:-  আইন অনুযায়ী যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের বাংলাদেশি পাসপোর্ট পাওয়ার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) মাসুদ রেজওয়ান। এর কারণ হিসেবে তারেক রহমানের কারাদণ্ড হওয়া এবং তার জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকার কথা বলেছেন তিনি। চার বছর আগে তারেক রহমান তার পাসপোর্ট যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জমা দেয়ার ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পর এ নিয়ে তুমুল আলোচনার মধ্যেই এ কথা জানালো হলো পাসপোর্ট ইস্যু করা সংস্থার পক্ষ থেকে। বৃহস্পতিবার নিজ দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছিলেন পাসপোর্ট অধিদপ্তরের প্রধান। তিনি নিশ্চিত করেন ২০১৪ সালে তারেক রহমানের পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও তিনি নবায়নের আবেদন করেননি। মাসুদ রেজওয়ান জানান, তারেক রহমান এখন আবেদন করলেও তার পাসপোর্ট পাওয়ার সুযোগ নেই। এর আইনি ভিত্তি ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘১৯৭৩ সালের পাসপোর্ট আদেশে বলা আছে যেকোনো আবেদনকারী দরখাস্ত পেশ করার তারিখ থেকে পূর্বের পাঁচ বছরের মধ্যে বাংলাদেশের যেকোনো আদালত দ্বারা নৈতিক স্খলনজনিত কারণে যদি দুই বছরের কারদণ্ড হয় তাহলে সে পাসপোর্ট পাবে না।’ ‘একইভাবে আরেক ধারায় আছে, যে আবেদনকারী দেশের ফৌজদারি আদালতে মামলার হাজিরা এড়াইতেছেন কিংবা এড়াবার চেষ্টায় আছেন এই রকম অবস্থায় কাউকে পাসপোর্ট দেওয়া হবে না।’ ‘সুতরাং তারেক রহমান যদি পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন তাহলে তিনি পাসপোর্ট পাবেন না।’ বিদেশে অর্থপাচারের মামলায় ২০১৬ সালের ২১ জুলাই তারেক রহমানের সাত বছরের কারাদণ্ড এবং ২০ কোটি টাকা জরিমানা করেছে উচ্চ আদালত। আবার গত ৮ ফেব্রুয়ারি সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া যে মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড এবং দুই কোটি ১০ লাখ টাকা জরিমানার সাজা পেয়েছেন, একই মামলায় তারেক রহমানও সাজাপ্রাপ্ত। তিনি মায়ের সমপরিমাণ জরিমানার পাশাপাশি দ্বিগুণ কারাদণ্ড পেয়েছেন। আবার ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলা ছাড়াও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি, ইতিহাস বিকৃতি, মানহানির একাধিক মামলায় তারেক রহমান আদালতের আদেশ উপেক্ষা করেছেন। তিনি দেশে ফিরে আত্মসমর্পণ করেননি। এর মধ্যে ১৪ বছর আগে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের জনসভায় গ্রেনেড হামলা মামলায় তারেক রহমানের মৃত্যুদণ্ড চেয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা মামলাটিতে চলতি বছরই বিচারিক আদালতে রায় ঘোষণা হতে পারে বলে আশা করছে রাষ্ট্রপক্ষ। আদালতের সাজা এবং মামলার বিষয় ছাড়াও তারেক রহমানকে নতুন করে পাসপোর্ট দেয়ার ক্ষেত্রে আরেক বাঁধা তার জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকা। ২০০৮ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে যখন ছবিসহ ভোটার তালিকা এবং জাতীয় পরিচয়পত্র করা হয়, তখন কারাগারে বন্দী ছিলেন তারেক রহমান। বন্দীদেরকেও সে সময় ভোটার করার পাশাপাশি এবং জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়া হয়। কিন্তু তারেক রহমান তখন ভোটার হননি। দণ্ডিত অনেকেই তো পাসপোর্ট পেয়ে থাকেন- এমন প্রশ্নে ডিজি বলেন, ‘আমরা অনেক সময় তাদের কাছ থেকে পাসপোর্ট উইথড্র (প্রত্যাহার) করে নেই। এবং দণ্ডিত হবার পরে অভিযুক্ত আর দেশ ত্যাগ করতে পারবে না, এই অর্ডারও আছে।’ পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ‘পাসপোর্ট পেতে হলে তাকে ন্যাশনাল আইডি কার্ড (জাতীয় পরিচয়পত্র) থাকতে হবে। আর সে ন্যাশনাল আইডি কার্ডের জন্য অবশ্যই তাকে বাংলাদেশে আসতে হবে।’ ‘আসার ক্ষেত্রে এখানে প্রশ্ন থাকতে পারে। তিনি কীভাবে বাংলাদেশে আসবেন। ট্রাভেল পাসের মাধ্যমে আমরা যে কোন দেশ থেকে যে কোন কাউকে নিয়ে আসতে পারি। উনি ট্রাভেল পাস নিয়ে দেশে ফিরে আসবেন। এরপর বাংলাদেশি ন্যাশনাল আইডি কার্ড নেবেনে। নেয়ার পর উনি পাসপোর্টের জন্য আবেদন করবেন।’ ‘এরপর আমরা দেশের প্রচলিত পাসপোর্ট আইনে যে পলিসি আছে সেগুলো দেখে তারপর পাসপোর্ট দেব।’ তারেক রহমান কি এখন পাসপোর্ট পাবেন না- আবারও এমন প্রম্ন করা হলে অধিদপ্তরের ডিজি বলেন, ‘না সে পাবে না। প্রথমে তাকে দেশে আসতে হবে। এর পর তাকে ন্যাশনাল আইডি কার্ড করতে হবে। তার পর আবেদন করতে হবে পাসপোর্টের জন্য। তবে আবেদন করলেও তিনি পাসপোর্ট পাবেন না। কারণ উনি অভিযুক্ত।’ তবে পাসপোর্ট না থাকলেও তারেক রহমানের দেশে ফেরার সুযোগ আছে। মাসুদ রেজওয়ান বলেন, ‘ট্রাভেল পাস নিয়ে দেশে আসতে পারবেন। ট্রাভেল পাস মূলত বাংলাদেশ অ্যাম্বাসি দিয়ে থাকে।’ ২০০৭ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার তারেক রহমান পরের বছরের সেপ্টেম্বরে প্যারোলে মুক্তি পেয়ে যুক্তরাজ্যে যান। তখন কথা ছিল চিকিৎসা শেষে তিনি ফিরে আসবেন। কিন্তু জামিনের মেয়াদ শেষ হলেও তারেক রহমান ফেরেননি। এর মধ্যে গত ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর তারেক রহমান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন হয়েছেন। বিএনপি নেতা এতদিন কীভাবে যুক্তরাজ্যে ছিলেন সেটি স্পষ্ট ছিল না। তবে গত ২১ এপ্রিল পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জানান, তারেক রহমান বাংলাদেশের পাসপোর্ট বর্জন করেছেন। দুই দিন পর বিএনপির পক্ষ থেকে পাসপোর্ট দেখানোর চ্যালেঞ্জ এবং তারেক রহমানের পক্ষ থেকে প্রতিমন্ত্রীকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়। আর একই দিন দেশে ফিরে প্রতিমন্ত্রী জমা দেয়া পাসপোর্টের ফটোকপি দেখান সাংবাদিকদেরকে। প্রতিমন্ত্রী জানান, তারেক রহমানের পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে। কিন্তু তিনি তা নবায়নের আবেদন না করে যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ২০১৪ সালের ২ জুন তা জমা দিয়েছেন। এরপর সেখান থেকে তা লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনে পাঠানো হয়। পাসপোর্ট অধিদপ্তরের ডিজি বলেন, ‘তারেক রহমান বাংলাদেশ ত্যাগ করেছেন ২০০৮ সালে। তখনও বাংলাদেশে মেশিনারি পাসপোর্ট চালু হয়নি। বাংলাদেশে মেশিনারি পাসপোর্ট চালু হয়েছে ২০১০ সালের ১ এপ্রিল। সুতরাং তারেক রহমান হাতে লেখা পাসপোর্ট নিয়ে বাংলাদেশ ত্যাগ করেছিলেন। সেই পাসপোর্টের নম্বরও আমাদের কাছে আছে। সেটার মেয়াদ ছিল ২০১০ সাল পর্যন্ত।’ ‘পরবর্তীতে উনি লন্ডন থেকে ওটার মেয়াদ বৃদ্ধি করেছেন। যেটা ২০১৪ সালে সারেন্ডার (যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে) করেছেন। … জমা দেওয়ার পরে তিনি আর কোন পাসপোর্টের আবেদন করেননি।’ ‘আমি গতকালও বিস্তারিত চেক করেছি; উনার নাম দিয়ে উনার জন্ম সাল দিয়ে। কিন্তু তিনি পাসপোর্ট নেননি। সুতরাং উনি যে লন্ডন আছেন সেটা বাংলাদেশি পাসপোর্ট ছাড়া।’ ২০১০ সালে কীভাবে তারেক রহমান পাসপোর্টের  মেয়াদ বৃদ্ধি করলেন-এমন প্রশ্নে ডিজি বলেন, ‘সে হাতের লেখা পাসপোর্ট বর্ধিত করা যেত, কোনোভাবে হয়ত করেছে। ২০১৫ সালের ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত হাতের লেখা পাসপোর্টের মেয়াদ বাড়ানো যেত।’ তারেক রহমান এখন কীভাবে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন-এমন প্রশ্নে পাসপোর্ট অধিদপ্তরের ডিজি বলেন, ‘এই প্রশ্নের উত্তর আমার কাছে নেই। ইউকে সরকার কীভাবে তাকে রাখছে, সেটা তাদের ব্যাপার। আমি শুধু পাসপোর্টের ব্যাপার জানি। উনি সর্বশেষ পাসপোর্ট নেননি।’

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
#
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat