×
  • প্রকাশিত : ২০২৩-০২-০৯
  • ২০৬ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক

কর্ণফুলি নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন স্বপ্নের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের নির্মাণ কাজ বর্তমানে প্রায় ৯৬ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে।
টানেলের প্রকল্প পরিচালক মো. হারুনুর রশিদ আজ বলেন, ‘কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেলের নির্মাণ কাজ ৯৬ শতাংশ শেষ হয়েছে। যান্ত্রিক স্থাপনার কাজ এখনো চলছে। এরই মধ্যে এপ্রোচ রোড নির্মাণের কাজও শেষ হয়েছে।’
তিনি বলেন, ক্রস প্যাসেজ ও টানেল সম্পর্কিত টোল প্লাজার নির্মাণ কাজও প্রায় শেষের দিকে রয়েছে।
‘টানেলের যান্ত্রিক, বৈদ্যুতিক ও সিভিল ওয়ার্ক চলছে এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাজও শেষ পর্যায়ে রয়েছে’- জানিয়ে রশিদ আশা প্রকাশ করেন, টানেলের নির্মাণ কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই শেষ হবে।
প্রকল্পের বিবরণ অনুসারে, নির্মাণাধীন টানেলের দৈর্ঘ্য হবে ৩ দশমিক ৪০ কিলোমিটার। এছাড়া, ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটারের একটি অ্যাপ্রোচ রোডের পাশাপাশি একটি ৭২৭ মিটার ওভার ব্রিজ রয়েছে, যার মাধ্যমে মূল শহর, বন্দর এবং নদীর পশ্চিম দিককে এর পূর্ব দিকের সঙ্গে সংযুক্ত করবে।
বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রথম টানেল টিউবের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন। ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং যৌথভাবে বঙ্গবন্ধু টানেলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
চায়না কমিউনিকেশনস কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড প্রকল্পের ঠিকাদার হিসেবে কাজ করছে।
টানেলটি প্রস্তাবিত এশিয়ান হাইওয়েকে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের সাথে সংযুক্ত করবে এবং চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারের দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার কমিয়ে দেবে। প্রকল্পের বিবরণ অনুযায়ী, এই টানেল দিয়ে যানবাহন ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার বেগে চলবে।
বঙ্গবন্ধু টানেল ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে। বাংলাদেশ ও চীন সরকারের যৌথ অর্থায়নে টানেল প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। চীনের এক্সিম ব্যাংক ৫ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে এবং বাকি অর্থ দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। চীনের এক্সিম ব্যাংক দুই শতাংশ হারে সুদে এই ঋণ দিয়েছে ।
নদীর নিচ দিয়ে এই ধরণের টানেল দক্ষিণ এশিয়ায় এটাই প্রথম। প্রকল্পের বাকি ৪ শতাংশ কাজ শেষ করতে ব্যাপক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। প্রকল্পে শ্রমিকদের পাশাপাশি দেশি-বিদেশি প্রকৌশলীরা সম্পৃক্ত রয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার বন্দরনগরীকে চীনের সাংহাই নগরীর মতো ‘ওয়ান সিটি, টু টাউন’ মডেলে পরিণত করতে দক্ষিণ চট্টগ্রামের পতেঙ্গা ও আনোয়ারা উপজেলাকে সংযুক্ত করতে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে এই টানেল নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করে।
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি ২০১৫ সালের নভেম্বরে ৮ হাজার ৪৪৬ কোটি ৬৪ লাখ টাকা ব্যয়ে মাল্টি-লেন রোড টানেল প্রকল্পটি অনুমোদন করে এবং প্রকল্পের মেয়াদ ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছিল।
পরবর্তীতে খরচ বাড়িয়ে ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি ৪২ লাখ টাকা করা হয় এবং প্রকল্পের মেয়াদ ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
সর্বশেষ সংশোধিত বাজেটে, প্রকল্পের মেয়াদ ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৩ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে এবং ব্যয় ১৬৪ কোটি টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
টানেল নির্মাণের আগে ২০১৩ সালে পরিচালিত জরিপ অনুসারে, বছরে ৬.৩ মিলিয়ন যানবাহন এই টানেল দিয়ে চলাচল করতে পারবে। সে অনুযায়ী দিনে প্রায় ১৭ হাজার ২৬০টি গাড়ি চলতে পারবে। ২০২৫ সালের মধ্যে বঙ্গবন্ধু টানেল দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ২৮ হাজার ৩০৫টি যানবাহন যাতায়াত করতে পারবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
#
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat