×
  • প্রকাশিত : ২০২২-০৮-১৭
  • ৩১৭ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে আইনের কঠোর পরিপালন করতে হবে। সেবা দানকারী সংস্থাগুলো সমন্বিতভাবে আইনের কঠোর পরিপালন না করলে পুরান ঢাকায় রাসায়নিক কারখানা ও গুদামে অনাকাঙ্খিত দুর্ঘটনা ঘটতেই থাকবে।
রাজধানীর লালবাগে দেবীদাস ঘাট লেনে সোমবারের অগ্নিকান্ডের স্থান পরিদর্শন শেষে আজ সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি একথা বলেন। 
মেয়র বলেন, ‘এটি আসলে অনাকাঙ্খিত। আসলে এটি (যেখানে খাবার হোটেল ও পলিথিন কারখানা গড়ে তোলা হয়েছে) একটি ওয়াক্ফ এস্টেট। এর কোনও বাণিজ্য অনুমতি (ট্রেড লাইসেন্স) নেই, এই স্থাপনার কোনও বৈধতা নেই। সেখানে রেস্তোরাঁ করেছে, কারখানা করেছে। কিন্তু আমরা বাণিজ্য অনুমতি না দেওয়া সত্ত্বেও সেখানে কিভাবে গ্যাসের সংযোগ পেল, বিদ্যুতের সংযোগ পেল? এ বিষয়গুলোতে আসলে সকল সংস্থাকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। এখানে আইন কঠোরভাবে পরিপালন করতে হবে। এর ব্যত্যয় হলে এরকম দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতেই থাকবে।’
সরকারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন থেকে যথার্থভাবে সকল কার্যক্রম গ্রহণ করা হলেও এখনও সেখানে বেআইনিভাবে রাসায়নিক কারখানা ও গুদামগুলো পরিচালিত হচ্ছে উল্লেখ করে ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, ‘আমরা ২০১৮ সালের পর থেকে এখানে কোনও ট্রেড লাইসেন্স দিচ্ছিনা। তারপরেও আপনারা দেখেছেন, এখানে অবৈধভাবে, বেআইনিভাবে তারা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এখানে কারখানা করেছে, রেস্তোরাঁ করেছে। এগুলো কিন্তু আসলে সবই অনিয়মতান্ত্রিক, বেআইনি। এরই মাঝে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিদ্ধান্তের আলোকে আমরা চিরুনি অভিযান পরিচালনা করে  ১৯২৪টি রাসায়নিক গুদাম ও কারখানা চিহ্নিত করেছি।’  
এ বছরের মধ্যে ৫০০টি কারখানা ও গুদাম স্থানান্তর করার তথ্য অবগত করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘রাসায়নিক কারখানা ও গুদামঘরগুলোর স্থানান্তর প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। শ্যামপুর শিল্পাঞ্চলে পাঁচশোটির মত গুদামঘর, কারখানা স্থানান্তরের প্রক্রিয়া নেওয়া হয়েছে এবং সেটা এ বছরের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে। এগুলোর সম্পূর্ণরূপে স্থানান্তর না হওয়া পর্যন্ত এ ধরনের দুর্ঘটনা থেকে আমরা মুক্তি পাব না। আমরা লক্ষ্য করেছি যে, দুঃখজনকভাবে ঘুমন্ত অবস্থায় ৬ জন মানুষ পুড়ে মারা গেছে। আসলে সকলের বোধোদয় না হলে, অবৈধ এসব কার্যক্রম চলমান থাকলে এ ধরনের দুর্ঘটনা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব হবে না। সেজন্য এসব বেআইনি ও অবৈধ কার্যক্রম বন্ধ করতে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।’
বাণিজ্য অনুমতি না থাকলেও বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস সংযোগ কিভাবে দেওয়া হলো - সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, ডিএসসিসি বাণিজ্য অনুমতি বন্ধ করে রেখেছে। অন্য সংস্থারগুলোর এগুলো যাচাই-বাছাই করে দেখা উচিত যে, তারা বাণিজ্য অনুমতি ছাড়া কিভাবে এখানে গ্যাস সংযোগ পাচ্ছে? ঢাকা শহরে বিভিন্নভাবে অবৈধ উপায়ে গ্যাস সংযোগ পেয়ে যায়। এটাও হয়তোবা খতিয়ে দেখলে দেখা যাবে যে, অবৈধভাবে এই সংযোগ নিয়েছে। এগুলো যদি আরও গভীরভাবে মাঠ পর্যায়ে যাচাই-বাছাই করা না হয়, কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া না হয়, তাহলে এ রকম দুঃখজনক ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে। প্রত্যেক বছরে দেখছি এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটছে। শুধুমাত্র নিমতলী বা চুড়িহাট্টায় নয়। প্রত্যেক বছরই কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটছে। 
এরপরে তিনি আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেলে চলমান পুনঃখনন কার্যক্রম ও নিউ মার্কেট সংলগ্ন বনলতা কাঁচাবাজার পরিদর্শন করেন।       
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ, সচিব আকরামুজ্জামান, প্রধান প্রকৌশলী সালেহ আহম্মেদ, পরিবহন বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মো. হায়দর আলী, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আরিফুল হক, অঞ্চল-১ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মেরীনা নাজনীন, অঞ্চল-৩ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা বাবর আলী মীর, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী মোর্শেদ হোসেন কামাল, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খায়রুল বাকের ও সংশ্লিষ্ট এলাকার কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
#
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat